ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

বৃষ্টি নামলেই চকরিয়া-বদরখালী-মহেশখালী সড়কে বড় বড় গর্ত ও জলাবদ্ধতা : যাতায়তে জনদুর্ভোগ চরমে

এম.মনছুর আলম, চকরিয়া : 

দীর্ঘদিন ধরে সড়কের সংস্কার না হওয়ায় কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভাস্থ থানা সেন্টারের পূর্ব পাশে আল মদিনা রাইচ মিল পয়েন্ট এলাকায়  বদরখালী-মহেশখালী সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। উপজেলায় যাতায়তে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে এটি। বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে গাড়ী চলাচল তো দূরের কথা, সাধারণ মানুষের যাতায়াত করাও দায় হয়ে পড়েছে।এতে চরম ভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। ওই স্থানে প্রতিনিয়ত গাড়ী উল্টে ঘটছে নানা ধরণের দূর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বিষয়টি দেখেও কোন ধরনের সংস্কারে এগিয়ে না আসায় ভুক্তভোগী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। প্রতিবছর বর্ষার শুরুতে সড়কটির ওই পয়েন্ট এলাকায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।শুষ্ক মৌসুমে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন ভাঙা অংশে নামমাত্র সংস্কার করে বেহাল সড়কটি চলাচলের উপযোগী করে তুলে। বিনিময়ে সড়ক বিভাগ কোটেশন কাজের বিপরীতে সরকারি কোষাগার থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা হরিলুটের প্রথা চলছে। কিন্তু স্থায়ীভাবে সড়কটি মেরামতে কার্যকর কোন ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে চকরিয়া-বদরখালী-মহেশখালীর প্রতিনিয়ত পণ্যবাহী যানবাহন ও দূরপাল্লার যানবাহনসহ হাজারো অধিকতর যান চলাচল করে থাকে।প্রতি বছরের মতো চলতি বছরও বর্ষার শুরু থেকে সড়কটি আবারও চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সড়কের খোদারকুম থেকে উপজেলা পরিষদের মগবাজার পর্যন্ত বেশির ভাগ অংশে খানা-খন্দকে ভরে গেছে।বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে যেন এক একটি ছোটখাটো পুকুর তৈরি হয়। এতে যাতায়তে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় পথচারীদের।এদিকে সড়ক বিভাগের অধীন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের গুরুত্বপুর্ণ এই সড়কটি দিয়ে স্বাভাবিক চলাচলে জনদুর্ভোগ সম্পর্কে স্থানীয় সর্বসাধারণের অভিযোগের শেষ নেই। সাধারণ মানুষের মাঝে এখন শুধুমাত্র একটাই প্রশ্ন এ সড়ক আদৌ সংস্কার হবে কি ? সংস্কার যদি না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাজ কি? সড়ক ও জনপথ বিভাগ চকরিয়া শাখার সড়কের খানা-খন্দক সংস্কার নিয়ে কোন ধরনের নজরদারি নেই বললেই চলে।এ নিয়ে ভুক্তভোগী জনসাধারণের যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই।

সড়কের খানা-খন্দক ও সংস্কার বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ও মন্তব্য করতে শুরু করেছে। বর্তমানে চকরিয়া সদরে সড়কটির বেহালদশা নিয়ে জনমনে নানা ধরনের অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। চকরিয়ার মহাসড়কস্থ থানা রাস্তার মাথা হয়ে কোন রকমে অর্ধকিলোমিটার পথ চলাচল করা গেলেও খোদারকুমের নামার অংশ থেকে পুরো উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত এ সড়কটির অবস্থা বড়ই নাজুক। সড়কটির বর্তমান বেহাল অবস্থা তুলে ধরে ক্ষোভ করে চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির বলেছেন, চকরিয়ার প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি বিশেষ করে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তারা সব সময় যাতায়াতকালে সড়কটির দুরবস্থা দেখেও না দেখার মতো থাকেন।তিনি আরো বলেন, মূলত আমাদের এলাকার জনপ্রতিনিধিরা চোখে কালো চশমা দিয়ে এসি গাড়ী নিয়ে যাতায়ত করার কারণে তারা দেখতে পাইনা।প্রতিনিয়ত খোদারকুম থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদের কোর্ট সেন্টার পর্যন্ত তাঁরা কম করে হলেও দৈনিক ৪থেকে ৫ বার যাতায়াত করেন। কিন্তু কেউ দেখেন না সড়কটির বর্তমান অবস্থা। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি বছরের পর বছর অবহেলিত। সংস্কারের নামে প্রতিবছর লোক দেখানো কিছু কাজ করা হলেও মূলত এর পেছনে কাজ করে বরাদ্দকৃত অর্থ হরিলুটের প্রথা। এ অবস্থায় যাতায়তের দুর্ভোগ লাঘবে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির স্থায়ী সংস্কার দাবি করছে ভুক্তোভোগীরা। এ বিষয়ে চকরিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কার্যালয়ের উপ-প্রকৌশলী আবু আহসান কাছে সড়ক মেরামত ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল সড়কটি হলো চকরিয়া-বদরখালী-মহেশখালী সড়ক। সড়কের খানা-খন্দক সমূহ ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার মেরামত করা হয়েছে।পুরো সড়কটি নতুন করে মেরামতের জন্য পুন:রায় নির্মাণ কাজের টেন্ডার শেষ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।#

পাঠকের মতামত: